আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য ।

 




আশুরা (১০ মহররম) ইসলামী ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, যার রয়েছে বহু ফজিলত ও তাৎপর্য। নিচে আশুরার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:


 আশুরার ইতিহাস ও গুরুত্ব:


১. নবী হযরত মূসা (আ.)-এর মুক্তি:

ইসলামী বর্ণনা অনুযায়ী, ১০ মহররমে আল্লাহ তাআলা ফেরাউনকে ধ্বংস করে মূসা (আ.) ও তার অনুসারীদের নদী পার করিয়ে রক্ষা করেন। এ কারণে ইহুদিরাও এই দিনটি রোজা রাখত।



২.নবী মুহাম্মদ (সা.) আশুরার রোজা রাখতেন:

মদীনায় হিজরতের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) দেখলেন, ইহুদিরা আশুরার রোজা রাখে। তখন তিনি বলেন:


"আমি মূসার চেয়ে তোমাদের অপেক্ষা অধিক হকদার।"

অতঃপর তিনি নিজেও রোজা রাখলেন এবং মুসলিমদেরও রাখতে নির্দেশ দেন।

— সহিহ বুখারি ও মুসলিম





৪.কারবালার ঘটনা (৬১ হিজরি):

এই দিনে হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবার কারবালার ময়দানে শহীদ হন। এ ঘটনাটি মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে গভীর দুঃখ ও শিক্ষা বহন করে।





"আশুরা" (আশোরা) হলো ইসলামি ক্যালেন্ডারের মহররম মাসের ১০ তারিখ। এটি হিজরি চান্দ্র মাস অনুযায়ী পালিত হয়, তাই প্রতি বছর এটি ভিন্ন ভিন্ন ইংরেজি তারিখে এবং ভিন্ন ভিন্ন বার পড়ে।


২০২৫ সালে আশুরা পড়বে:


🔹 ১০ মহররম ১৪৪৭ হিজরি

🔹 ইংরেজি তারিখে: ৫ জুলাই ২০২৫

🔹 বার: শনিবার


এই দিনটি ইসলাম ধর্মে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে শিয়া মুসলমানদের কাছে এটি কারবালার যুদ্ধে ইমাম হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের জন্য শোকের দিন। সুন্নি মুসলমানদের কাছেও এটি ফজিলতপূর্ণ একটি দিন — তারা এ দিনে রোজা রাখেন, কারণ হযরত মূসা (আ.)-এর বাঁচার দিন হিসেবেও এটি উল্লেখিত আছে হাদীসে।



🌟 আশুরার ফজিলত ও আমল:


১.রোজা রাখা:

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:


> "আশুরার দিনের রোজা আগের বছরের গুনাহর কাফফারা হিসেবে কাজ করে।"

— সহিহ মুসলিম (1162)




তবে তিনি আরও বলেছেন:


> "তোমরা আশুরার সঙ্গে একদিন আগে বা পরে রোজা রাখো— ৯ ও ১০, অথবা ১০ ও ১১ তারিখে।"

— মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ



২.তওবা ও ইবাদত:

এই দিন ইবাদত-বন্দেগি, দোয়া, তওবা এবং গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করার বিশেষ সুযোগ।



৩.পরিবারের খরচ বাড়ানো:

হাদিসে এসেছে:


> "যে ব্যক্তি আশুরার দিনে নিজের পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ বাড়াবে, আল্লাহ তাআলা সারা বছরের জন্য তার রিজিক বাড়িয়ে দেবেন।"

— বায়হাকী শরীফ


📌 উপসংহার:


আশুরা শুধু কারবালার স্মরণ নয়; এটি নবী মূসা (আ.)-এর মুক্তি, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাত, রোজার ফজিলত এবং ইসলামী চেতনার প্রতীক। আমাদের উচিত এ দিনে ইবাদত-বন্দেগি, রোজা রাখা এবং আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে দিনটি পালন করা।


মাওঃ মোঃ আল আমিন মিয়া 

এম,এস বি এ কামিল ইসলামিক স্টাডিজ 


সম্পাদক কুমিল্লা ট্রিবিউন বাংলা অনলাইন নিউজ 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url