কুমিল্লা সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফ ও সোনাকান্দা দারুল হুদা বহুমুখী কামিল মাদ্রাসায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র কাফেলার কেন্দ্রীয় পরিষদের পরিচিতি সভা ও ঈদ ।
কুমিল্লা সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফ ও সোনাকান্দা দারুল হুদা বহুমুখী কামিল মাদ্রাসায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র কাফেলার কেন্দ্রীয় পরিষদের পরিচিতি সভা ও ঈদ পুনর্মিলনী গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
যুবকদের ব্যাপারে রাসূল (সা:)-এর ভবিষ্যদ্বাণী
ইসলামের বড় উপকার এবং বড় ক্ষতি তরুণদের দ্বারাই হয়েছে -পীর সাহেব সোনাকান্দা
ডেস্ক রিপোর্ট
সহযোগিতা মাওঃ মোঃ আল আমিন মিয়া
ড. হা. মো. ছলিম উল্লাহ খাঁন (সোনাকান্দা) থেকে
কুমিল্লা সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফ ও সোনাকান্দা দারুল হুদা বহুমুখী কামিল মাদ্রাসায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র কাফেলার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ মেহেদী হাসানের আহ্বানে পরিষদের পরিচিতি সভা ও ঈদ পুনর্মিলনী গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র কাফেলার কেন্দ্রীয় সভাপতি পীরজাদা আবু জার মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ তা’লীমি হিজবুল্লাহ’র কেন্দ্রীয় আমীর এবং বাংলাদেশ ছাত্র কাফেলার প্রধান উপদেষ্টা, প্রিন্সিপাল মুহাম্মদ মাহমুদুর রহমান পীর সাহেব (মা.জি.আ.)। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপদেষ্টা ম-লীর সদস্য তা’লীমি হিজবুল্লাহ’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ছফিউল্লাহ এবং সহ-অর্থ সম্পাদক মাওলানা মোবারক হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামী যুব কাফেলার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কামরুল হাসান সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র কাফেলার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতৃবৃন্দ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোনাকান্দার পীর সাহেব বলেন আল্লাহর রাসূল (সা:) যুবকদের ব্যপারে অনেক ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। যুবকদের দ্বারা ইসলামের ব্যাপক উপকার হয়েছে, আবার যুবকদের দ্বারা ইসলামের ব্যাপক ক্ষতিও হয়েছে। সাহাবী মুস’আব ইবনে উমাইর (রা.)’র কথা উল্লেখ করে পীর সাহেব বলেন মুস’আব ইবনে উমাইর (রা.) ছিলেন আরবের ধনকুবের পিতার সন্তান। দামি জামা, দামি পারফিউম ব্যবহার করতেন।
![]() |
মাদ্রাসা মূল ভবন, মসজিদ নির্মানাধীন। |
সকালের জামাটি বিকালে পরতেন না, আর বিকালের জামাটি সকালে পরতেন না । তিনি যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতেন তার সুগন্ধির ঘ্রাণে মানুষ বুঝতে পারতো এ রাস্তা দিয়ে মুস’আব ইবনে উমাইর হেঁটে গেছেন। তার বয়স তখন ২০ বছর ছিল। তখনো ইসলামে দাখিল হননি। পরবর্তীতে আল্লাহর রাসূল (সা:) এর দা’ওয়াতে ইসলাম কবুল করে বাবা-মা, পরিবার পরিজন সব ত্যাগ করে চলে আসেন ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে। অতঃপর, তিনি হন ইসলামের শিক্ষক এবং দ্বীন প্রচার করেন মদিনার সাধারণজন থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ পর্যন্ত। তার দা’ওয়াতে মদিনা বাসি হয়ে গেলেন প্রিয়নবী (সা:)‘র প্রেমিক-পাগল। এমনিভাবে তরুণ ছিলেন হযরত ওমর, উসমান, আলী (রা.)। উনাদের দ্বারা ইসলাম ব্যপকতা লাভ করেছে। অন্যদিকে তরুণ মুনাফিক নেতা আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের দ্বারা ইসলামের বিশাল ক্ষতি হয়েছে। খারেজী ফেরকার অনুসারীরা বাড়াবাড়ির কারণে ইসলাম থেকে খারেজ বা বহিষ্কার হয়েছে। সেখানেও ছিল পথভ্রষ্ট যুবকদের পদচারণা আর তাদের দ্বারাই শহীদ হয়েছেন আলী (রা.)। হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে পীর সাহেব বলেন প্রিয়নবী (সা:) বলেছেন, শেষ জামানায় একটা গ্রুপ বের হবে। যারা হবে বয়সে কম, জ্ঞান বিবেকে অপরিপক্ক, এরা পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো ভালো কথা বলবে। তারা বলবে দ্বীন কায়েম করবো, কোরআনের রাজ কায়েম করবো, জিহাদ করবো, রাসূল (সা:) বলেছেন, তারা দ্বীন থেকে এমন ভাবে বের হয়ে যাবে যেভাবে ধনুক থেকে তীর বের হয়ে যায়। রাসূল (সা:) বলছেন, তাদেরকে যারা হত্যা করবে, তারা উহুদ-বদরের
![]() |
সোনাকান্দা দারুল হুদা বহুমুখী কামিল মাদ্রাসা |
মুজাহিদদের সমান মর্যাদার অধিকারী হবে। আমি চাই যে, সংগঠনের যে নিয়ম কানুন আছে, সেই নিয়ম কানুন অনুযায়ী নিজস্ব গতিতে চলতে থাকুক এবং অনেক দূর এগিয়ে যাক। আমরা দূর থেকেই এই সংগঠনকে পর্যবেক্ষণ করবো। আমরা শুধু লক্ষ্য রাখবো যে, নীতি আদর্শ ঠিক আছে কিনা। আর দেখবো, আপনারা কতটুকু এগিয়ে যেতে পারছেন, নিজস্ব ক্যাপাসিটিতে। অতঃপর তিনি বলেন, একে অপরের সাথে পরিচিত হওয়াটা সবার জন্য একান্ত প্রয়োজন এবং অপরিহার্য একটা বিষয়। অন্যথায়, কাজ করা সম্ভব না। সব মিলিয়ে পরিচয় হওয়া এবং নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে পূর্ণ অবহিত হওয়া এবং দায়িত্ববোধ বজায় রাখার তাৎপর্য তুলে ধরেন তিনি। তিনি পর্যায়ক্রমে বলেন, ছাত্র কাফেলা এবং যুব কাফেলা খুব স্পর্শকাতর বিষয়। পীর সাহেব বর্তমান ফিতনা ফাসাদের কথা উল্লেখ করে বলেন, হাল জামানার ফিতনা ফাসাদ সংক্রান্ত হাদিসের অধ্যায়গুলো আমাদের সকলকে গবেষণার দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে অধ্যয়ন করে এ সংক্রান্ত বিষয়াবলীতে গভীর জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তাহলে দেখা যাবে প্রিয় রাসূল (সা:) এর কথাগুলো অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেছে। রাসূল (সা:) আমাদেরকে সেই দেড় হাজার বছর
আগেই সতর্ক করে গেছেন। এগুলো আমাদেরকে জানতে হবে। জেনে আমরা আমাদের নিজেদেরকে এ ফেতনা থেকে রক্ষা করতে হবে। রাসূল আমাদেরকে যেই সোজা রাস্তা দেখিয়ে গেছেন, সে পথে আমাদেরকে চলতে হবে। অন্যান্য বক্র রাস্তাগুলো থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে। নবিজী (সা:) এর প্রদর্শিত পথে চলার জন্যই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র কাফেলা ও ইসলামী যুব কাফেলা সব সংগঠন আপনাদেরকে দরবারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। যেনো আমরা এ সংগঠনের মাধ্যমে ১৫০০ বছর আগে শেষ জামানার যে ফেতনাসমূহ আল্লাহর রাসূল (সা:) তার উম্মতকে অবহিত করে গেছেন, সে সমস্ত ফিতনা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারি, সোজা রাস্তায় চলতে পারি। তিনি বলেন, আমাদেরকে দুর্বল মনে করার কোন কারণ নেই। তিনি রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কর্মকান্ড লক্ষ করে বলেন, আমাদের সংগঠনে মিছিল নেই, মিটিং নেই, মারামারি নেই, হরতাল নেই, অবরোধ নেই! এটা আবার কেমন সংগঠন? এমন মনে করার কোন কারণ নেই। কারণ, শয়তানি জিনিসের মধ্যে স্বাধ ও মজা বেশি। ভালো জিনিসের প্রতি স্বাধ ও মজা লাগে না, ভালো লাগে না। ১০ মিনিট সময় দিয়ে নামাজ পড়তে পাহাড় সমান কষ্ট লাগে। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করে আড্ডা দিতে, ফাজলামি করতে, শয়তানি করতে কষ্ট লাগেনা, সময় নষ্ট হয়না। কারণ, এটার পিছনে একটা নফসের একটা দুষ্ট চক্রান্ত আছে, তার নাম শয়তান! শয়তান বন্ধু নয়, শয়তান শত্রু। পবিত্র কোরআনে রয়েছে, ‘শয়তান হলো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু’। আর সে কিয়ামত পর্যন্ত জীবিত থাকবে। সুতরাং, আমাদেরকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। শয়তানের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করে বিজয়ী হতে হবে। চারটি শত্রুর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই হবে। ১) নফস ২) শয়তান ৩) মুনাফিক ও ৪) কাফের। এই চার শত্রুর বিরুদ্ধে আমাদেরকে লড়াই করতে হবে। আমাদের পরম আশা যে আমরা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের উপরেই আছি। হাদিস শরীফে আছে এক দল লোক কেয়ামত পর্যন্ত হকের ওপরে প্রতিষ্ঠিত থাকবে। আমরা ইন-আল্লাহ, দাবি করতে পারি, আমরা হকের ওপরে আছি। আলহামদু-লিল্লাহ। সুতরাং,
নির্ভয়ে দায়িত্ব-কর্তব্য মনে করে আমাদের সকলকে সামনে এগুতে হবে। আমার একান্ত ইচ্ছা ও আশা হলো দেশের প্রতিটি স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ক্যাম্পাস কমিটি করা। তিনি জাতীয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যেমন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইত্যাদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্যাম্পাস কমিটি গঠন করার ইচ্ছা পোষণ করেন। অতঃপর, সকলকে নিয়ে তিনি দায়িত্ব পালনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোন এবং সর্বশেষ দু’আ ও মুনাজাতের মাধ্যমে বক্তব্য শেষ ক
রেন।